সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর পাশাপাশি অস্ত্রের যোগান বাড়াচ্ছে উভয় দেশ

- ডেস্ক রিপোর্ট:
- 06 May, 2025
কাশ্মিরে জঙ্গী হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এরমধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভা সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। তবে, উভয় দেশকে সংযুক্ত থাকার আহবান জানানো হয়েছে সদস্য দেশ গুলির পক্ষ থেকে। এদিকে, উত্তেজনার পারদ বাড় সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর পাশাপাশি অস্ত্রের যোগান বাড়াচ্ছে উভয় দেশ ।
ভারত-পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনা প্রশমনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। সোমবার দেড় ঘন্টা স্থায়ী এই বৈঠকে শেষে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা পৃথক পৃথক ভাবে নিজেদের মতামত প্রকাশ করলেও নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে যৌথ কোন বিবৃতি প্রকাশ করেনি।
এদিকে বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পাকিস্তান বর্তমানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হলেও ভারত এর সদস্য নয়। চলতি মাসে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিত্ব করছে গ্রিস।
বৈঠক শেষে জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখার আহমেদ জানান, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কাউন্সিলের সদস্যদের জানানোই ছিল ওই বৈঠকের মুল উদ্দেশ্য। সংঘর্ষ এড়াতে উদ্ভূত পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দেওয়া যায়, তা নিয়েও মত বিনিময় হয়েছে ওই বৈঠকে।
নিরাপত্তা পরিষদে মে মাসে সভাপতিত্বের দায়িত্বে থাকা গ্রিসের স্থায়ী প্রতিনিধি ইভানগেলস সেকেরিস জানান, বৈঠকে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে, যা আগামী দিনে সাহায্য করবে। নিরাপত্তা পরিষদের অন্যতম স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র রাশিয়াও বৈঠক শেষে জানিয়েছে, উত্তেজনা কমার বিষয়ে তারা আশাবাদী। তবে বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করেনি কোন দেশ। প্রকাশ করা হয়নি যৌথ কোন বিবৃতিও। বৈঠকে জঙ্গী সংগঠন লস্কর-ই তৈয়বার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা খবর দিয়েছে।
এদিকে ইসলামাদে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত সে দেশের প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করে উদ্ভুদ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে সহযোগিতার আশ^াস দিয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নিউ ইয়রর্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে অঞ্চলটির পরিস্থিতি তুলে ধরেছে পাকিস্তান। তারা সংলাপ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে উত্তেজনা কমানো এবং শান্তি পূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের আহবান জানিয়েছে। অবশ্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি।
পাকিস্তানের একের এক ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা ও পারমানবিক হুমকি উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণ বলেও অনেক সদস্য মনে করেন। সমস্যা সমাধানে দ্বিপাক্ষিকভাবে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেয়া দেয়া হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের পাশাপাশি সংঘাত-সংর্ঘষ থেকে সরে আসার আহবান জানান।
রেটিং সংস্থা মুডি'স সতর্ক করে বলেছে, দু’দেশের এই উত্তেজনার কারণে পাকিস্তানের ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। একইভাবে উচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যায়ের কারণে ভারতের স্থিতিশীলতারও উপর চাপ পড়তে পারে।
এদিকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে রাজস্থান, গুজরাত, পাঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীর সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে মহড়া চালানোর নির্দেশ দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগামীকাল বুধবার এই মহড়া হওয়ার কথা রয়েছে।
দু’দেশের উত্তেজনার মধ্যে ’ইগলা-এস’ নামে স্বল্পমাত্রার ক্ষেপনাস্ত্র ভারতকে সরবরাহ করেছে রাশিয়া। সহজে বহনবহনকারী মাঝারি পাল্লায় এই ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে মাঝ আকাশেই ড্রোনসহ যদ্ধু বিমান ধ্বংস করা যাবে। এছাড়া রাশিয়া থেকে পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার জেড এসইউ-৫৭সহ ড্রোন কেনারও উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদার করতে রাশিয়া থেকে কেনা হয়েছে এস-ফোর হানড্রেড।
বসে নেই পাকিস্তানও! এরমধ্যে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ টিসিজি বুয়ুকডা পাকিস্তানে পৌঁছেছে। পাকিস্তানকে আগোস্টা ৯০বি ক্লাস সাবমেরিনের আধুনিকীকরণ, ড্রোনসহ অন্য যুদ্ধাস্ত্র দিয়েছে তুরস্ক। এ ছাড়া প্রায়ইশ যৌথ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে দুই দেশের সেনারা।
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
